কলা খেলে কী কী উপকার

কলা খাওয়ার উপকার
অনেকেই বলে থাকেন যদি খাও প্রতিদিন কলা, মিটে যাবে শরীরের যত জ্বালা। কলার বহুগুণ তা আমরা জানি। কিন্তু কী কী গুন আছে সে বিষয়ে কতটা জানি। আমরা শুধু শুধু বিদেশি দামি ফলের দিকে ঝুঁকে পড়ি। কিন্তু দেশের কলা শরীরের নানা উপকার করে থাকে সেই সব বিদেশি ফলের থেকে বেশি। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে সকলের প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া প্রয়োজন। কলাতে আছে উচ্চমাত্রার ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। কলা আমাদের কী কী উপকার করে একটু দেখে নিই। কলায় রয়েছে বিপুল পরিমাণে আয়রন যা শরীরে লহিত রক্তকণিকার মাত্রা বৃদ্ধি করার মধ্যে দিয়ে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগে ভুগছেন, তারা আয়রন ট্যাবলেটের পাশাপাশি যদি নিয়ম করে কলা খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুণ উপকার মিলতে পারে।

কলা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
কলায় আছে ভিটামিন বি6, যা শরীরের জন্য অ্যামিনো এসিড সৃষ্টি করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে এবং হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টির জন্য কলা উৎকৃষ্ট। কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা ও সল্যুবল ফাইবার, যা থেকে শরীর শক্তি সঞ্চয় করে থাকে।

কলা কিডনি সুস্থ রাখে
মানুষের শরীরে কিডনি খুবই গুরত্বপূর্ণ অংশ। কলার পটাশিয়াম কিডনিকে ভালো রাখে। ইউরিনে ক্যালসিয়াম জমা হতে বাধা দেয়। এর ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। হাঁড় মজবুত হওয়ার জন্য ক্যালসিয়াম বরাদ্দ থাকে।

কলা হৃদযন্ত্র ভালো রাখে
কলায় প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকে। প্রতিদিন কলা খেলে হৃদযন্ত্র অনেক বেশি সচল থাকে। হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

খাদ্য হজমে সহায়তা করে
কলার ফাইবার ও প্রোবায়োটিক অলিগোস্যাকারাইজড হজমে দারুণ সহায়ক। এরফলে শরীর আরও বেশি পরিমাণে পুষ্টি সঞ্চয় করতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য অতিরিক্ত পাকা কলা খেতে পারেন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে কলার ভেতরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা পাচকরসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে। শরীরের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলো বের করে দেওয়ার মধ্যদিয়ে দেহের প্রতিটি অঙ্গকে চাঙ্গা রাখতে কলার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এই ফলটিতে আছে প্রেকটিন নামক একটি উপাদান, শরীরের প্রবেশ করা মাত্র ক্ষতিকর উপাদানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কলা প্রোটেক্টিভ মিউকাস লেয়ার বৃদ্ধির মাধ্যমে পাকস্থলিতে পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে, যা আপনাকে বুক-জ্বালা ও পাকস্থলীর আলসার থেকে রক্ষা করবে। কলা ডোপামিন, ক্যাটেচিন্স এর মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর দারুণ উৎস। এগুলো শরীরকে সার্বিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার কাজ করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
অতিরিক্ত পাকাকলা শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ TNF-A নামক এক ধরণের যৌগ সরবরাহ করে, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। এতে করে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

কলা সুনিদ্রায় সহায়তা করে, মানসিক চাপ কমায় এবং ত্বক সজীব করে
কলায় রয়েছে ট্রিপটোফ্যান নামের অ্যামিনো এসিড যা সেরোটোনিনে পরিবর্তিত হয়। সেরোটোনিনের সঠিক মাত্রা আপনার মুড ঠিক রাখবে এবং মানসিক চাপ কমাবে। এতে করে আপনার ভালো ঘুম হবে। কলার চামড়ায় কিছু পরিমাণে ফ্যাটি উপাদান আছে, যা ত্বকে ঘষলে ময়েশ্চারাইজারের মতো উপকার পেতে পারেন। আবার ব্রন দূর করার জন্যও কলার চামড়া ব্যবহার করা হয়। কলায় পটাশিয়াম ছাড়াও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার যা অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে ও ওজন নিয়ন্ত্রনে আসে। কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও ফাইবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

1 thought on “কলা খেলে কী কী উপকার”

Leave a Comment