পর্ণো আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

পর্ণো আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়
ইন্টারনেট এখন হাতের মুঠোয়। অনেকে ইন্টারনেটকে হাতের মুঠোয় থাকাটাকে দোষের মনে করছেন। কিন্তু ইন্টারনেট হচ্ছে একটি যোগাযোগ মাধ্যম। যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে আপনি কোন বাজে কাজ করলে সে যোগাযোগ মাধ্যমের দোষ নয় দোষ হচ্ছে ব্যবহারকারীর। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট পৃথিবীটাকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। সাথে সাথে ভালো বিষয়ের সাথে অনকে খারাপ বিষয় মানুষের কাছে এনে দিয়েছে। অনেক ভালোর সাথে পর্ণোগ্রাফি এখন হাতের নাগালে। স্কুল পড়ুয়া বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে পর্ণোগ্রাফির আসক্তি বেড়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। সারা বিশ্বে পর্ণো ছবির দর্শক বেড়েই চলেছে। অনেকে পর্ণো দেখা নেশা বা আসক্তির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। পর্ণো দেখার ফলে বিকৃত যৌনাচারের বিষয়গুলো বেড়ে যাচ্ছে। অনেক সময় সংসারও ভেঙে যাচ্ছে। পর্ণো আসক্তির কারণে নিজের অজান্তেই নিজের ক্ষতি করে ফেলছেন অনেক নর-নারী। পর্ণো আসক্তির ফলে কী কী ধরণের মানসিক ও শারিরীক ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পর্ণো ভিডিও আসক্তির কুফল
১. পর্ণো আসক্তি আপনার কাম শক্তি নষ্ট করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে অতিমাত্রায় পর্ণো দেখলে মানুষের যৌন উত্তেজনা কমে যায়। কারণ তার ব্রেন যৌন চিন্তা নিয়ে ভাবতে পারে না। পর্ণোগ্রাফির ভিডিওর হাই ডেফিনেশন ভিডিও দেখতে দেখতে আপনার কল্পনার জগতে চলে যেতে ইচ্ছে করে। মানুষ কল্পনার জগতে চলে যায়। তাই বাস্তবের স্বাভাবিক যৌন জীবন আর ভালো লাগে না।
২. পর্ণো আসক্তির ফলে মানুষ অবসাদে ভোগে। তার ব্রেনের চিন্তাশক্তি কমে যায়। ঘুম কমে যায়। একা একা থাকতে পছন্দ করে। স্মরণশক্তি কমে যায়, চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যায়, মনোযোগ থাকে না। মানুষ বিষণ্ন হয়ে পড়ে।
৩. অতিমাত্রায় পর্ণো দেখার ফলে পুরুষদের নারীদের প্রতি টান কমে যায়। কারণ সে সবসময় পর্ণো নায়িকাদের মত ফিট, চকচকে চেহারার সাথে বাস্তবের সঙ্গীর চেহারা ও শরীরের গঠনের সাথে মেলাতে থাকে। এভাবে বাস্তবের নারীদের প্রতি তার আর আকর্ষণ তৈরি হয় না। পর্ণো নারীদের শরীর এই কাজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। তার জন্য তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। পর্ণো দেখা পুরুষ কিংবা নারী বাস্তবের সঙ্গীকে সেই সব সঙ্গীর সাথে মেলাতে গিয়ে হতাশ হয়। যার ফলে বাস্তব জীবনে যৌন সম্পর্কে বাজে প্রভাব তৈরি করে। অনেক সময় স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। পুরষ স্ত্রীর সাথে নারী স্বামীর সাথে মিলনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাদের মধুর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
৪. নিয়মিত পর্ণো দেখার ফলে হস্তমৈথুনের অভ্যাস বেড়ে যায় যা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। মাত্রাতিরিক্ত হস্তমৈথুন নানা ধরণের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া হস্ত মৈথুনের ফলে যৌন জীবনেও নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

পর্ণো আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে হলে যা করতে হবে:
১. আপনার মনই আপনাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। প্রথমে মনকে ঠিক করতে হবে। আপনি যদি একবার ভেবে ঠিক করে ফেলেন যে, আপনি আর পর্ণ দেখবেন না। চিন্তা স্থির হয়ে গেলে আপনি আর দেখবেন না। আপনার অভ্যাসকে একটি নেশা থেকে মুক্ত করতে হলে একটু পরিশ্রম করতে হবে। আপনি যদি আপনার অভ্যাসকে বার বার নিষেধ করেন যে- আসিন না! একদিন দেখবেন আপনি সফল হয়েছেন। পর্ণ দেখা বিষয়ে নেতিবাচক চিন্তা করতে হবে। নেতিবাচক চিন্তা করতে করতে দেখবেন একদিন আপনি ফিরে এসেছেন।
২. আপনার ডিভাইসে যতপ্রকার পর্ণো লিংক আছে সব ক্লিন করুন। কোন ছবি থাকলে কিংবা ভিডিও থাকলে ডিলিট করে দিন। হাতের কাছে থাকলেই দেখতে ইচ্ছে করবে। তাই হাতের কাছে যা আছে তা ডিলিট করে দিন।
৩. গোপনে কোন কনটেন্ট দেখবেন না। কনটেন্ট এমন দেখুন যে কনটেন্ট সবাইকে নিয়ে দেখতে পারেন। দরোজা বন্ধ করে দেখতে হয় এমন কনটেন্ট দেখবেন না।
৪. ব্রাউজারে নিষিদ্ধ করে দিন পর্ণো সাইটগুলো। এমনকি পর্নো কিওয়ার্ড ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে, রাউটারে ব্লক করে রাখুন। ব্রাউজারে কিওয়ার্ডগুলো ব্লক করে রাখুন।
৫. ধর্মীয় বই পড়ে পারেন। মুসলমান যারা আছেন তারা নামাজ পড়ে মনকে স্থির করতে পারেন। ধর্মে অবৈধ কাজকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই বিষয়ে মনে মনে ভাবুন। এবং ধর্মে কী শাস্তির কথা বলা হয়েছে তা নিয়ে ভাবুন। ধর্মে বলা হয়েছে পবিত্র থাকতে পবিত্র থাকার জন্য ধর্ম চর্চার মাধ্যমে মনকে পবিত্র করুন। অন্য ধর্মের মানুষজন- তাদের ধর্মে নারীদের সম্মান জানিয়ে কী বলা হয়েছে। অনাচার ও ব্যাভিচার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে সে বিষয়গুলো নিয়ে পড়ুন। এবং ভাবুন। মনকে পবিত্র করার উপায়গুলো খুঁজে নিন।
৬. পর্ণো দেখার জন্য কোন বিষয়গুলো আপনার মনকে টানছে সে বিষয়গুলো চিহ্নিত করুন। এবং সেগুলোকে ব্লক করে দিন। এভাবে সুস্থ জীবনের জন্য পর্ণো আসক্তি তাড়াতে পারেন।

সুস্থ জীবনের জন্য, সুন্দর পারিবারিক জীবনের জন্য পর্ণো আসক্তিতে তাড়াতে হবে। না হলে আপনার মনে অসুস্থ চিন্তা বাসা করবে। আপনাকে কখনোই শান্তি দেবে না। এখন আপনি শান্তি চান না অশান্তি সে আপনিই নির্ধারন করুন।

Leave a Comment