আইপি এড্রেসের কী? আইপি এড্রেস কীভাবে কাজ করে?

আইপি এড্রেসের কী? আইপি এড্রেস কীভাবে কাজ করে?
আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করি সবাই আইপি এড্রেসেরে নাম শুনেছি বা জানি। কিন্তু আইপি এড্রেস বা ইন্টারনেট প্রটোকল এড্রেস কীভাবে কাজ করে তা হয়তো জানি না। ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি ডিভাইসের আইপি এড্রেস থাকে এবং এটির মাধ্যমে সেই ডিভাইস ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হয়। ইন্টারনেটে একটি ডিভাইসের পরিচয় হিসেবে আইপি এড্রেস সকল যায়গায় প্রদর্শিত হয়। একজন হ্যাকার, বিজ্ঞাপন দাতা, সরকারের কোন সংস্থা বা ইন্টারনেট সার্ভিস যারা প্রদান করেন, যখন তারা আপনার তথ্য সংগ্রহ করেন তখন তারা আপনার আইপ এড্রেস ব্যবহার করে। আপনার অনলাইনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে তারা অনেক তথ্যর সাথে আপনার আইপি এড্রেসও ব্যবহার করে। তাই আপনার আইপি এড্রেস ইন্টারনেটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

সহজভাবে বলতে গেলে, Internet Protocol Address বা IP Address হলো একটি ইউনিক Numerical Identifier, যা ইন্টারনেটে সংযুক্ত সকল ডিজিটাল ডিভাইস যেমন: মোবাইল, কম্পিউটার, রাউটার, প্রিন্টার এবং গেম কনসোল ইত্যাদি ডিভাইস গুলোকে নেটওয়ার্কে সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।

প্রত্যেকটি ডিজিটাল ডিভাইসের একটি নিজস্ব ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা অন্যান্য ডিভাইসে কানেক্ট হয় এবং তথ্য শেয়ার করে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যখন ইন্টারনেটে কোনো একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন, তখন সেই ওয়েবসাইটের সার্ভারকে বুঝতে হবে যে, সেই রিকোয়েস্টটি কোন ডিভাইস থেকে এসেছে এবং পরবর্তীতে তথ্য কোন ডিভাইসে প্রেরণ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবে, আমরা বাড়ির নম্বর দিয়ে কোনো এলাকার নির্দিষ্ট বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পেতে পারি। একইভাবে, ইন্টারনেটে একটি ডিভাইস থেকে অন্য একটি ডিভাইসে তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে অন্য ডিভাইসকে সনাক্ত করার মাধ্যম হলো আইপি অ্যাড্রেস। অর্থাৎ, ইন্টারনেটে সেই ডিভাইসটির পরিচয় বা ঠিকানা হিসেবে আইপি অ্যাড্রেস কাজ করে।

যদিও ইন্টারনেট সংযুক্ত প্রত্যেকটি ডিভাইসের একটি ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস থাকে, কিন্তু ইন্টারনেটে সেই ডিভাইস দিয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তার নিজস্ব আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করা হয় না। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই রাউটারের একটি নিজস্ব আইপি অ্যাড্রেস থাকে, যা দিয়ে সেটি ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট হয়। রাউটার তার সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি ডিভাইসকে একটি ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস প্রদান করে, যেটিকে লোকাল আইপি অ্যাড্রেস বলা হয়। এখানে রাউটারটি ইন্টারনেটের ডিভাইসগুলোর মধ্যে একটি গেটওয়ে হিসেবে কাজ করে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি যখন আপনার মোবাইল থেকে কাউকে একটি ইমেইল পাঠান বা কোনো একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, তখন ইন্টারনেটে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আপনার মোবাইলের IP Address কোথাও প্রদর্শিত হয় না। এই ক্ষেত্রে, আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আপনার বাড়ির রাউটারের জন্য যে পাবলিক আইপি অ্যাড্রেস প্রদান করেছে, সেটির মাধ্যমে ইন্টারনেটে যোগাযোগ হয়। অর্থাৎ, আপনি যখন আপনার মোবাইল থেকে কোনো একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য রিকোয়েস্ট পাঠান, তখন সেই রিকোয়েস্টটি আপনার রাউটার হয়ে ইন্টারনেটে যায়। এখানে রাউটার এবং আপনার ডিভাইসের মধ্যে থাকে একটি লোকাল আইপি অ্যাড্রেস, যা রাউটার কর্তৃক প্রদান করা হয়। এই আইপি অ্যাড্রেসটি এজন্যই প্রদান করা হয়, যাতে করে রাউটারের সাথে সংযুক্ত ডিভাইসগুলোকে সনাক্ত করা যায়।

ইন্টারনেট থেকে সেই তথ্যটি নিয়ে আবার আপনার ডিভাইসেই প্রেরণ করার জন্য এই লোকাল আইপি অ্যাড্রেসটি কাজ করে। আপনি যদি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই আপনার ডিভাইসের নির্ধারিত প্রাইভেট আইপি অ্যাড্রেস ইন্টারনেটে রেকর্ড হয় না। তবে, কিছু লোক যদি আপনার এই আইপি অ্যাড্রেসটি পেয়ে যায়, তারা আপনার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পেতে পারে। এর মধ্যে যেমন: আপনি কোথা থেকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হয়েছেন, আপনি কোন ওয়েবসাইট বা সার্ভিসগুলো ব্যবহার করেন ইত্যাদি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।

Leave a Comment