একটি ইউটিউব চ্যানেল কীভাবে খুলবেন?

একটি ইউটিউব চ্যানেল কীভাবে খুলবেন

ইউটিউব ভিডিও শেয়ারিংয়ের জন্য পৃথিবীর সব থেকে জনপ্রিয় ও আদর্শ মাধ্যম। দিনে দিনে ইন্টারনেট এর সহজলভ্যতার কারণে মানুষ ইউটিউবের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এখন অনেকেই টিভি চ্যানেলের নিদ্রিষ্ট কোন অনুষ্ঠানের জন্য বসে থাকে না। কোন কিছু হলেই ইউটিউবে সার্চ দিয়ে দেখে নেয়। তাই অনেক টিভি চ্যানেলও এখন ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিমিং করছে। ইউটিইব অনেকের আয়ের মাধ্যম হয়েও দেখা দিয়েছে। ইউটিউবে কোন বিষয়ে ভিডিও নেই সার্চ করে দেখুন। ইউটিউবের ভিডিও যেমন বিভিন্ন টিভি চ্যানেল থেকে পেয়ে থাকি। আবার এই প্লাটফর্মে অনেক অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আছে যারা ভালো ভালো ভিডিও তৈরি করে আপলোড করে থাকেন। যদিও অনেক মানহীন ভিডিয়োও ইউটিউবে রয়েছে। যারা ইউটিউব খুলতে পারেন আজকের আলোচনা তাদের জন্য নয়। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন কীভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলবো? তার উপায় কী? এই আলোচনা তাদের জন্য।

কেন আপনি ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন?

এমন হতে পারে আপনার মেধা রয়েছে কিন্তু আপনি তা সবাইকে দেখাতে চান। যা মানুষের মঙ্গলে কাজে লাগবে। কিংবা ধরুন আপনি ভালো গান গাইতে পারেন, কবিতা আবৃত্তি করতে পারেন, কিংবা ভালো রান্না করতে পারেন, বিভিন্ন বিষয়ে আপনার দক্ষতা আছে যা মানুষের প্রয়োজন পড়তে পারে, আপনি ভালো অভিনয় জানেন- মানুষকে বিনোদন দিতে চান। এমন হলে আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে আপনার প্রতিভা দেখাতে পারেন। অনেক বিজনেস প্রমোশনের জন্যও ইউটিউবকে ব্যবহার করছে। কারণ ইউটিউব এখন শুধু ভিডিও দেখার সাইট নয়। এটি এখন বড় সার্চ ইঞ্জিনে পরিণত হয়েছে। অনেকে এখন কিছু খুঁজতে চাইলে ইউটিউবে ঢু মারেন। একটি প্রফেশনাল চ্যানেল খুলে আপনি এই প্লাটফর্ম থেকে টাকাও ইনকাম করতে পারেন। কিন্তু এর জন্য ভালো কনটেন্ট প্রয়োজন। এর জন্য জানতে হবে কিছু কৌশল।

ইউটিইব চ্যানেল খুলতে কী লাগে?

আপনার কী একটি জিমেইল একাউন্ট আছে। তবে জেনে রাখুন আপনার একটা ইউটিউব চ্যানেলও আছে। যদি আপনার জিমেইল আইডি না থাকে তবে এখনই একটি জিমেইল আইডি খুলে নিন।

ইউটিইব চ্যানেল কীভাবে খুলবেন?

চ্যানেল খুলতে হলে প্রথমে ইউটিউবের সাইটে প্রবেশ করুন। ব্রাইজারে www.youtube.com এই এড্রেসটি টাইপ করে ইউটিউব এর সাইটে প্রবেশ করুন। ইউটিউব এর সাইনইন বাটনে ক্লিক করে আপনার জিমেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করুন। উপরের দিকের ডান দিকের প্রোফাইল আইকন বাটনে ক্লিক করুন। প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করার পর অনেকগুলো অপশন দেখাবে- আপনি সেটিং অপশনে ক্লিক করবেন। করার পর দেখবেন একটি পেজ অপেন হয়েছে এবং সেই পেজে লেখা আছে Create a new channel, আপনি এখানে ক্লিক করুন। ক্লিক করার একটি অপশন আসবে সেখানে আপনি আপনার চ্যানেলের নাম লিখুন। নাম লিখে ক্রিয়েট অপশনে ক্লিক করলেই একটি চ্যানেল হয়ে গেল।

কীভাবে চ্যানেলটি ভ্যারিফাই করবেন?

চ্যানেল খোলার পর প্রথম কাজ হচ্ছে চ্যানেলটিকে ভ্যারিফাই করে নেওয়া। কারণ ভ্যারিফাই না করলে আপনি 15 মিনিট এর বেশি ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। এবং চ্যানেলে 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম হলে ও 1000 সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হলে চ্যানেলকে মনিটাইজ করে টাকাও ইনকাম করতে পারবেন।

চ্যানেলকে প্রফেশনাল করে তুলতে হলে কী করতে হবে?

চ্যানেলকে প্রফেশনাল করে গড়ে তুলতে হলে আপনাকে আপনার চ্যানেলের জন্য একটি লগো তৈরি করতে হবে। লগো তৈরির জন্য একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাছে যেতে পারেন নয়তো অনলাইনে কিছু সাইট আছে সেখান থেকেও ফ্রিতে বানিয়ে নিতে পারেন। চ্যানেলের জন্য চ্যানেল আর্ট তৈরি করতে হবে। গুগলে সার্চ দিলে এই বিষয়ে ভালো ধারনা পেয়ে যাবেন। চ্যানেল আর্টের মাপ হয় 2560 পিক্সেল বাই 1440 পিক্সেল। সেটিংসে গিয়ে আপনার চ্যানেল সম্পর্কে লিখুন। আপনার চ্যানেলটি যে বিষয়ের ওপর তৈরি করেছেন সেই বিষয়ে লিখুন। এগুলো আপনার চ্যানেলকে দ্রুত গ্রো করতে সহযোগিতা করবে।

প্রাথমিকভাবে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে

১. অন্যের ভিডিও ডাইনলোড করে কখনোই নিজের চ্যানেলে আপলোড করবেন না।
২. সব সময় নিজের ভিডিও আপলোড করুন।
৩. কপিরাইট মুক্ত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করুন।
৪. কপিরাইট ফ্রি মিউজিক পেতে ইউটিউবের নিজস্ব স্টোর আছে সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিন।
৫. স্যাক্সুয়াল ভায়োলেন্স যুক্ত কোন ভিডিও আপলোড করবেন না।
৬. ইউটিউবের কমিউনিটি গাইডলাইন আছে সেটি পড়ে দেখুন এবং মেনে চলার চেষ্টা করুন।
৭. প্রাথমিকভাবে ভিউ কম আসবে কিন্তু তার জন্য অধৈর্য হয়ে নিজের ভিডিও নিজে ঘন ঘন দেখবেন না।

ইউটিউব বিষয়ে বিস্তারিত আরও আলাপ রয়েই গেল। আবারও কখনও হয়তো ভিডিও আপলোড করার নিয়ম, ট্যাগ লেখার নিয়ম, টাইটেল লেখার পদ্ধতি, ভিডিও কী করে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া যায় ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

Leave a Comment