নিজ ভাষা শুদ্ধ করে লেখা

নিজ ভাষা শুদ্ধ করে লেখা
ভাষা বিষয়ে যে বেশি সন্দেহপ্রবণ তার লেখা তত শুদ্ধ। ভাষা শুদ্ধভাবে লিখতে পারার দক্ষতা অর্জনে সন্দেহপ্রবণ মন খুব সহযোগী হতে পারে। এই বিষয়ে অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার বলেন যে, শব্দের গঠনরীতি সম্পর্কে আগে জানা প্রয়োজন নয়তো ভাষা সঠিকভাবে লেখা সম্ভব না। শব্দের গঠনরীতি না জানার ফলে বাংলা ভাষার বানান অশুদ্ধ হয়। অনেকে একটি শব্দের সাথে মিল করে আন্দাজে বানান লিখে থাকে। যেমন- সহযোগী যেহেতু গ এর ওপর ী কার আছে তখন এর সাথে মিল করে অনেকেই সহযোগীতা লিখে থাকেন এবং বানান ভুল হয়ে যায়। সহযোগীতা বানান হবে সহযোগিতা সুতরাং একে সহযোগীর সাথে মেলানো যাবে না। আমরা বেশ কিছু বানান অহরহ ভুল করে থাকি। যেমন- সখ্য বানানকে আমরা লিখে ও বলে থাকি সখ্যতা। সৌজন্যকে বলি সৌজন্যতা। দারিদ্র্যতা বানানও ভুল বানান, দরিদ্রতা বানানের দেখাদেখি দারিদ্র্য বানানকে অনেকে দারিদ্র্যতা লিখে থাকে।

পড়া ও পরা বানান এর ভুল প্রয়োগ প্রায়ই আমরা অনলাইন সামাজিক মাধ্যমে দেখতে পাই। অনেকেই খুব উচ্চ শিক্ষিত। পরা যে পরিধান করা আর পড়া যে লেখা পড়া বা চিৎপটাং হয়ে পড়ে যাওয়া এর পার্থক্য করতে পারে না অনেকেই। অনেকেই স্বাস্থ্য, স্বাগত, স্বাগতম শব্দের আগে সু ব্যবহার করে থাকেন। এই সব শব্দের মধ্যে সন্দেহাতীতভাবে সু অর্থই প্রকাশ পাচ্ছে। তাই সুস্বাস্থ্য, সুস্বাগতম ইত্যাদি লেখা বাহুল্য এবং অশুদ্ধ। তারি লাগি কত ফেলেছি অশ্রুজল। গানে বা কবিতার মিলে ভালোই লাগছে। কিন্তু অশ্রু মানেই পানি। চোখের পানি। এখানে জল লাগানো বাহুল্য ছাড়া আর কিছু না।

অনেকে লিখে থাকেন স্বপরিবার, স্ববান্ধব। স্ব শব্দের অর্থ নিজ। এখন কেউ যদি বলেন যে, আপনি স্বপরিবার আমন্ত্রিত। এখানে যে নিমন্ত্রণ করছেন তিনি তাকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। স্বপরিবার কথার অর্থ নিজের পরিবার, আর সপরিবার শব্দের অর্থ হচ্ছে পরিবারসহ। সুতরাং শব্দ লেখার ক্ষেত্রে একটু ভেবে বুঝে সন্দেহ হলে অভিধান দেখে লেখা উচিত। নিজ ভাষা বলেই যা ইচ্ছা তা লেখা উচিত না। আমি বহুদিন ধরে চেষ্টা করছি শব্দ প্রয়োগের শুদ্ধ রূপ শিখতে।

Leave a Comment