প্যাসিভ ইনকাম করার সেরা পদ্ধতি

প্যাসিভ ইনকাম করার সেরা পদ্ধতি
আপনি কী ঘুমের মধ্যেও ইনকাম করতে চান? বলা খুব সহজ যে আপনি ঘুমের মধ্যেও এটি করতে পারেন। কিন্তু ইনকাম করার জন্য অবশ্যই আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম করলে আপনি ঘুমিয়ে থাকলেও ইনকাম আপনার হাতে আসবে এটা সত্যি। এই ইনকাম করার পদ্ধতিগুলো বয়ান করিছি। দেখুন কীভাবে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারেন অনলাইন থেকে।

কীভাবে প্যাসিভ ইনকাম করা যায় সে বিষয়গুলো শিখতে আপনাকে অবশ্যই কোয়ালিটি সময় ব্যায় করতে হবে। আপনার বেতন আপনার সুখ ও আনন্দের কারণ। যদি তা কম হয় আপনি আপনার মত করে অনেক কিছুই করতে পারেন না। আপনি যদি আপনার ইনকাম নিয়ে স্বাচ্চন্দ্যের মধ্যে না থাকেন তবে আপনার তা আপনার জীবনের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে। আপনি যদি মনে করে আপনি যা ইনকাম করছেন তা সেন্তোষজনক না তবে অতিরিক্ত অর্থ লাভের জন্য আপনাকে অন্য একটি আয়ের জন্য চেষ্টা করতে হবে।

প্রথমে ঠিক করে নিই আমার প্যাসিভ ইনকামের জন্য আমি কী পদ্ধতি বেছে নিতে পারি। যেহেতু এটা আপনাকে আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে সেহেতু এই বিষয়টি নিয়ে আপনাকে একটু ভেবে নিতে হবে। অযথা সময় নষ্ট করে কিংবা অনলাইন প্রজেক্টে সময় টাকা ইনভেস্ট করে নিজে নিজে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জন্য আপনি প্যাসিভ ইনকামের কাজে জড়াবেন না। অনলাইন থেকে প্যাসিভ ইনকাম করছে এমন কিছু জনপ্রিয় উপায় সম্পর্কে এখানে তুলে ধরছি।

প্যাসিভ ইনকাম হল যা লেকেরা সাধারণত সক্রিয়ভাবে কাজ না করে নিয়মিত ইনকাম করে। বিভিন্ন আয়ের উৎস তৈরি করে আপনার কিছু কাজ থেকে নিয়মিত উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আয় করতে পারবেন। শুরুতে আপনার এই আয়ের জন্য মাঠ তৈরি করতে পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রমটা একটু বেশিই করতে হবে। হতাশ হবেন না নিয়মিত কাজ করে গেলে একদিন সফলতা আসবেই। আপনার সৃজনশীল চিন্তাভাবনাকে উৎসর্গ করে দিন আজই। নিম্নে সাতটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকামের আইডিয়া শেয়ার করছি যা থেকে আপনি আপনার জন্য প্যাসিভ ইনকামের একটি উপায় খুঁজে নিতে পারেন।

১. ড্রপশিপিং
২. ব্লগিং
৩. ডিজিটাল কনটেন্ট
৪. ই-বুক
৫. ডিজিটাল ডাউনলোড
৬. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
৭. ইউটিউবের জন্য কনটেন্ট তৈরি করে আয়।

ড্রপশিপিং
ড্রপশিপিং ইদানিংকালে দারুন প্যাসিভ ইনকামে মাধ্যম। এটা মূলত অনলাইনে খুচরা দোকান মত। আপনাকে একটি অনলাইন স্টোর (ওয়েব সাইট) খুলতে হবে। ড্রপশিপিং সাইট তার সাইটের অর্ডারটি পরিপূর্ণ করতে তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারীর পরিষেবাগুলো থেকে সার্ভিস প্রদান করে থাকেন। ড্রপশিপিংয়ের জন্য আপনাকে পণ্যটি আপনার স্টোরে রাখতে হবে না। আপনি অন্য রিটেল সাইটের অর্ডার আপনার সাইটের মাধ্যমে পূরণ করে বিক্রি করবেন। এই ব্যবসায় আপনার তেমন ঝুকি নেই কারণ আপনি বিক্রয় না হওয়া পর্যন্ত অনুরোধ করা পণ্যটি ক্রয় করবেন না। এই ব্যবসা করার জন্য আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকা ভালো। তবে ওয়েবসাইট না থাকলেও Wix, Shopify এবং Bigcommerce এর মত প্লাটফর্ম থেকেও আপনি নিদ্রিষ্ট দক্ষতা ছাড়াই ড্রপশিপিং এর ব্যবসা  শুরু করতে পারেন। ‍উল্লেখিত সাইটগুলো সম্পর্কে আজই ধারণা নিন এবং স্টাডি করুন। এই পদ্ধতিগুলো কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করুন। দেখবেন এই সাইটগুলো থেকে আপনার ভালো এমাউন্টের প্যাসিভ ইনকাম আসতে শুরু করেছে।



ব্লগিং
অবসর সময়ে লেখালেখি করে নিজের ব্লগে প্রকাশের মাধ্যমে একটি দারুন প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ রয়েছে। আপনি একটি ব্লগের মাধ্যমে আপনার জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো বিনিময় করুন। মানুষের যে তথ্যগুলো প্রয়োজন বলে মনে করছেন সে সম্পর্কে লিখুন। মানুষ আগ্রহী হয়ে আপনার ব্লগ পড়তে আসবে। এই মানুষগুলোই আপনার ইনকামের পথ তৈরি করে দেবে। আপনি তাদের দেবেন তথ্য ও আনন্দ তারা আপনাকে দেবে আয়ের সুযোগ। আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন, অনুমোদিত এফিলিয়েট লিংক কিংবা ডিজিটাল পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারেন। ব্লগিং করার জন্য আপনাকে মোটামুটি রকমের এসইও জানতে হবে। আপনার কনটেন্ট লিখতে হবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে। সার্চ ইঞ্জিনের বান্ধব করে তুলতে হবে আপনার ব্লগকে। একবার ব্লগে নিয়মিত ভিজিটর আসা শুরু করলে বিভিন্ন ব্রান্ড আপনাকে অফার দেবে তাদের পণ্য আপনার ব্লগে প্রচার করার জন্য। বিনিময়ে আপনি নিদ্রিষ্ট পরিমাণে অর্থ পাবেন।

ব্লগিং শুর করতে আপনাকে যে বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে তা হল:
১. আপনার ব্লগের জন্য নিদ্রিষ্ট একটি বিষয় নির্বাচন করতে হবে।
২. ব্লগের জন্য উপযুক্ত প্লাটফর্ম নির্বাচন করুন।
৩. একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন। নামটি হতে হবে যে বিষয়ে লিখতে চান তার ওপর নির্ভর করে। ডোমেইন হচ্ছে আপনার অনলাইন ঠিকান। ঠিকানাগুলো সাধারণ এমন হয়: www.blog.com
৪. ভালোমানের ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিকে বেছে নিন।
৫. আপনার ব্লগের সুন্দর একটি ডিজাইন করুন। কনটেন্ট লিখুন এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করুন।
৬. আপনার ব্লগের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করুন। প্রোফাইল ব্যাকলিংক তুলনামূলকভাবে সহজ তাই প্রাথমিকভাবে এটিই করুন।

ডিজিটাল কনটেন্ট
আপনার হয়তো এমন দারুন দক্ষতা রয়েছে যার জন্য মানুষ আপনাকে অর্থ প্রদান করতে প্রস্তুত। আপনার এই দক্ষতা ডিজিটাল মাধ্যমে কোর্স বিক্রির মাধ্যমে আপনার ইনকামের একটি পথ তৈরি করতে পারেন। একবার একটি কনটেন্ট তৈরি করে তা অনেকের মাঝে অনেকবার বিক্রি করা যায়। প্রাথমিকভাবে এটি প্রস্তুত করতে আপনার অনেক পরিশ্রম হবে কিন্তু একবার অনলাইন কনটেন্ট তৈরি হয়ে গেলে এটি আপনাকে বছরের পর বছর আয় দিতে পারে। আপনার ডিজিটাল কনটেন্ট বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন। ইউটিউবে পাবলিস্ট করতে পারেন। ইউটিউব থেকেও ভালো একটি ইনকাম আসতে পারে। আপনার জ্ঞান বিনামূল্যে না বিলিয়ে এটিকে প্যাসিভ ইনকামের উপায় হিসেবে ব্রান্ডিং করুন। দেখেবেন এটি আপনার জীবনকে বাড়তি আয় এনে দিয়েছে।

ডিজিটাল ডাউনলোড
একটি ডিজিটাল ডাউনলোড প্লাটফর্ম তৈরি করুন। ডাউনলোডগুলোতে থাকবে আপনার নিজেস্বতা। যা আপনার গ্রাহকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার ক্লায়েন্টরা তা গুরুত্ব দিয়ে কিনবেন। ই-বুক, কোন কোর্স, গাইড, কিংবা কোন গ্রাফিক্স টেমপ্লেটগুলো ডাউনলোড প্লাটফর্মে দিতে পারেন এবং সেগুলো বিক্রির মাধ্যমে ভালো প্যাসিভ ইনকাম করতে পারেন। শুরুতে আপনার প্রতিযোগী করা সেই বিষয়ে গবেষণা করা। গুগল থেকে সম্পর্কিত কিওয়ার্ডগুলো নিয়ে গবেষণা করা। এবং সেই বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করা। যাতে করে আপনার কনটেন্ট সবার আগে সার্চে গ্রাহকদের দৃষ্টিগোচর হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
আপনার যদি একটি ভালো ব্লগ থাকে এবং সেখানে প্রচুর ভিজিটর থাকে তবে আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে সেই বিজ্ঞাপনের ভিউ ও ক্লিক থেকে নিদ্রিষ্ট পরিমাণে ইনকাম করতে পারেন। এটি একটি ভালো মাধ্যমে কারণ আপনি অন্যের পণ্য প্রচার করার মাধ্যমে এবং তাদের সেল জেনারেট করার মাধ্যমে ইনকাম করছেন। বিভিন্ন সাইটের পণ্যের এফিলিয়েট লিংক প্রচার করে তার মাধ্যমে সেল জেনারেট করে অনেকেই এখন ভালো কমিশন লাভ করছে এবং এই মাধ্যমকে অনেকে বিকল্প ইনকামের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে। অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলো প্রচারের ভালো মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেই, YouTube চ্যানেল, ব্লগ। সবচেয়ে সুপরিচিত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম হল Amazon Associates & ShareASale। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ভালো মানের পণ্যের প্রচার করতে হবে। নয়তো একদিন আপনি আপনার সাইটের ভিজিটর হারাবেন। এবং আপনার প্যাসিভ ইনকামের একটি ভালো পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

YouTube কনটেন্ট তৈরি করে আয়
আপনি যদি ভালো প্রেজেন্টার হন। এবং ভিডিও তৈরিতে আপনার সখ থেকে থাকে তো কোন বিষয় নির্বাচন করে আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে এখনই কাজ শুরু করে দিন। প্রতি মাসে অন্তত তিনটি ভিডিও প্রকাশ করুন। আপনার নিদ্রিষ্ট একটি দর্শক শ্রেণি তৈরি হয়ে গেলে সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে আপনার ইনকামের সুযোগ তৈরি হবে। অনেকেই আজকাল ইউটিউব কনটেন্টকে তাদের আয়ের প্রধান উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

সুতরাং আপনার দক্ষতা ও জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে আপনি কোন দিকে যেতে চাইছেন তা আজই নির্ধারণ করে নিন। এবং কাজ শুরু করে দিন। পরিশ্রম কখনও বৃথা যায় না। যাবে না।

Leave a Comment