ফুটবল খেলা ও ফুটবল বিশ্বকাপ

ফুটবল খেলা ও ফুটবল বিশ্বকাপ

ফুটবল খেলার জন্ম


অনেকে মনে করে থাকেন আনুমানিক আড়াই হাজার বছর আগে ফুটবল খেলা চীনে জন্ম হয়। তারা মনে করে থাকেন চীনেই আধুনিক ফুটবলের নিয়ম তৈরি হয়েছিলো। তবে ইতিহাসের পাতা বলছে ১৮৬৩ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম ফুটবল খেলার জন্মহয়। ক্রিকেট খেলার মত ফুটবল খেলার জনক দেশ হিসেবে ইংল্যান্ড গর্ব করে থাকে। এই সময়ে এসে দুইশতাধিক দেশ ফুটবল খেলে থাকে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য ২১০টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিলো। ২৫০ মিলিয়নের অধিক খেলোয়াড় সারা বিশ্বে ফুটবল খেলে থাকেন।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কতগুলো দেশ অংশগ্রহণ করেছিলো


এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য ২১০টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিলো। ২৫০ মিলিয়নের অধিক খেলোয়াড় সারা বিশ্বে ফুটবল খেলে থাকেন। বর্তমান মূল বিশ্বকাপের পূর্বে তিন বছর ধরে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ৩২ টি দল চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। ফুটবল বিশ্বকাপের দল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। পরবর্তী বিশ্বকাপ ৩২ দলের পরিবর্তে ৪৮ দলের হতে যাচ্ছে। ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে ৪৮ দল বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।

ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা কখন ভাবা হয়


ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রথম বৈঠক হয় ১৯০৪ সালে। প্যারিসে বসে ফিফার কর্মকর্তারা ফুটবলের বিশ্ব প্রতিযোগিতা করার কথা ভাবেন। এরপর ১৯২৮ সালে আমস্টারডামে অলিম্পিক চলাকালে চার বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ


১৯২৯ সালে সিদ্ধান্ত হয় প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হবে ১৯৩০ সালে। সেই সময় চার দেশ প্রথ বিশ্বকাপ আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো। দেশগুলো হলো-হল্যান্ড, ইতালি, স্পেন ও সুইডেন। কিন্তু উরুগুয়ে পর পর দুবার (১৯২৪, ১৯২৮) সোনাজয়ী হওয়ায় উরুগুয়েকে এই দুর্লভ সম্মান দেওয়া হয়। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজক হয় উরুগুয়ে।

প্রথম গোল ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন


বিশ্বকাপরে ইতিহাসে প্রথম গোল করেন ফ্রান্সের খেলোয়াড় লুসিয়েন লরেন্ত। ফাইনাল খেলায় ৯৩ হাজার দর্শকের সামনে উরুগুয়ে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।

কে কখন চ্যাম্পিয়ন হয়


১৯৩০ সালে উরুগুয়ে ৪-২ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৩৪ সালে ইতালি ২-১ গোলে চেকোস্লোভাকিয়াকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৩৮ সালে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ৪-২ গোলে জয় লাভ করে এবং চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপের আয়োজন হয়নি। ১৯৫০ সালে ব্রাজিলকে উরুগুয়ে ২-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৫৪ সালে জার্মানি হাঙ্গেরিকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ১৯৫৮ সালে সুইডেনকে ৫-২ গোলে পরাজিত করে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৬২ সালে ব্রাজিল ৩-১ গোলে চেকোস্লোভাকিয়াকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড ৪-২ গোলে জার্মানিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৭০ সালে ব্রাজিল ৪-১ গোলে ইতালিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৭৪ সালে সালে পশ্চিম জার্মানি ২-১ গোলে হল্যান্ডকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা ৩-১ গোলে হল্যান্ডকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮২ সালে ইতালি ৩-১ গোলে জার্মানিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮৬ সালে আর্জন্টিনা ৩-২ গোলে জার্মানিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৯০ সালে জর্মানি ১-০ গোলে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৯৪ সালে গোলশূন্য ড্র হওয়ার পর ট্রাইব্রেকারে ব্রাজিল ৩-২ গোলে ইতালিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮৮ সালে ফ্রান্স ৩-০ গোলে ব্রাজিলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০২ সালে ব্রাজিল ২-০ গোলে জার্মানিকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০৬ সালে ১-১ গোলে অমিমাংসিত থাকলে ট্রাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে ফ্রান্সকে পরাজিত করে ইতালি চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১০ সালে ১-০ গোলে হল্যান্ডকে পরাজিত করে স্পেন চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৪ সালে ১-০ গোলে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করে জার্মানি চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৮ সালে ৪-২ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে পরাজিত করে স্পেন চ্যাম্পিয়ন হয়।

কোন দল কতবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়


ব্রাজিল ৫ বার (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪, ২০০২), ইতালি ৪ বার (১৯৩৪, ১৯৩৮, ১৯৮২, ২০০৬), জার্মানি ৪ বার (১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০, ২০১৪), আর্জেন্টিনা ২ বার (১৯৭৮, ১৯৮৬), উরুগুয়ে ২ বার (১৯৩০, ১৯৫০), ফ্রান্স ২ বার (১৯৯৮, ২০১৮), স্পেন ১ বার (২০১০), ইংল্যান্ড ১ বার (১৯৬৬)।

Leave a Comment