ইউটিউব SEO কাকে বলে? ইউটিউব ভিডিও কীভাবে এসইও করা যায়?

ইউটিউব SEO কাকে বলে? ইউটিউব ভিডিও কীভাবে এসইও করা যায়?

একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পর আমরা দেদার ভিডিও আপলোড করতে থাকি। কিন্তু তেমন ভিউ হয় না। ভিডিও এসইও এই ক্ষেত্রে খুব জরুরি হয়ে পড়ে। যখন আপনি এসইও করবেন না তখন আপনার ভিডিওতে কম ভিজিটর আসবে। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিটর আসছে না- কী করবো? আপনার আপলোড করা ভিডিওগুলো মানুষ কেন দেখছে না সে বিষয়ে কী ভেবে দেখেছেন? কিংবা আপনার ভিডিও গুগলের সার্চ অথবা ইউটিউবের সার্চ রেজাল্টে দেখাচ্ছে না। এইসব ক্ষেত্রে উত্তর এই যে- আপনারা আপনাদের ভিডিওতে এসইও ঠিকঠাক করছেন না।

এসইও করার পূর্বে তিনটি বিষয় আপনাকে জানতে হবে-

১. ইউটিউব ভিডিওর এসইও কেন করতে হবে
২. এসইও কী?
৩. নিজেদের ভিডিওর এসইও কেমন করে করবেন?

ইউটিউব ভিডিওর এসইও কেন করতে হবে?

ভিডিও আপলোড করার পূর্বে নিশ্চিত আপনার ভিডিও কোন একটা বিষয়ের ওপর করেন। যে বিষয়ে ভিডিও বানাবেন সেই বিষয়ে একবার ইউটিউবে সার্চ করে দেখবেন। দেখবেন সেই বিষয়ে পূর্বে অনেক ভিডিও করা আছে। এবং সার্চ ইঞ্জিনের সামনের সাড়িতে কিছু ভিডিও আছে। এভাবে আপনি আপনার টপিকের ওপর অন্য প্রতিযোগীদের খুঁজে পাবেন। ধরুন আপনার বিষয়ে পূর্বে থেকেই অনেক ভিডিও আছে ইউটিউব কেন আপনাকে সামনে নিয়ে আসবে? একটু প্রতিযোগীদের গবেষণা না করে আপনার ভিডিওতে নতুনত্ব আনতে না পারেন তবে আপনার ভিডিও দর্শকরা দেখবেন না। এবং সার্চ ইঞ্জিন আপনাকে কখনও উপরের দিকে দেখাবে না। এখন এসইও করে আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনকে বোঝাতে হবে আপনি যে বিষয়ে ভিডিও তৈরি করেছেন তা পূর্বের ভিডিওর থেকে আলাদা এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। এভাবে ইউটিউবের সার্চ এলগারিদমকে জানাতে পারবেন যে আপনার ভিডিও উপরের সারিতে দেখানোর জন্য যোগ্য। এগুলো করতে হবে এসইওর মাধ্যমে। তাই ভিডিওতে এসইও করতে হবে।

এসইও কী?

এতসময় ধরে আমরা এসইও সম্পর্কে বলছি। আসলে এসইও কথার মানে কী? এসইওর মানে হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এসইওর মাধ্যমে আপনার ভিডিও বা ওয়েবসাইটের কোন টপিককে সার্চ ইঞ্জিনের টপ টেনে আনার একটি পদ্ধতি। ইউটিউবে হাজার হাজার ভিডিও রয়েছে আপনার ভিডিওকে খুঁজে পেতে আপনাকে আরও ভালো টেকনিক ব্যবহার করতে হবে। ভিডিও আপলোডের সময় থেকে ভিডিওর ট্যাগ লেখা, ভালো থাম্বনেইল তৈরি করা, যথাযথভাবে শিরোনাম লেখা ইত্যাদি এসইওর অংশ।

নিজের ভিডিও কেমন করে এসইও করবেন?

ভিডিও বানানোর পূর্বে দেখে নিন যে বিষয়ে আপনি ভিডিও বানাতে চাইছেন সে বিষয়ে ইউটিউব বা ইন্টারনেটের কী ধরনের চাহিদা রয়েছে। প্রথমে দেখে নিন আপনার বিষয়ে ভিডিও ইউটিউবে কীভাবে আছে। এবং আপনি কীভাবে মানুষের কাছে উপস্থাপন করতে চাইছেন। নয়তো কষ্ট করে ভিডিও বানাবেন কিন্তু কোন ফল হবে না। ভিডিও এমনভাবে বানান এবং তার শিরোনাম দিন যে বিষয়গুলো মানুষ ভিজিট করছে। ‍আপনি চিন্তা করুন আপনি ইউটিউবে সার্চ করলে কীভাবে সার্চ করতেন। এসইওর বড় বিষয় হল কিওয়ার্ডস। এবং এই কিওয়ার্ডস সার্চ করার বিভিন্ন টুলস আছে অনলাইনে। কোন কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম কেমন, কম্পিটিশন কেমন সে বিষয়ে জানার জন্য অনলাইনের টুলসগুলো ব্যবহার করুন। এবং কম কম্পিটিশনের কিওয়ার্ডস ব্যবহার করে আপনার ভিডিও তৈরি করুন। এবং ভিডিওর টাইটেল তেমন রাখুন।

ক্রোম ও ফায়রফক্স ব্রাউজারের জন্য কিওয়ার্ডস এভরিহয়ার এক্সটেনশন নামিয়ে নিতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি যে কিওয়ার্ড বিষয়ে সার্চ করবেন সেই কিওয়ার্ডের সাথে আরও অনেক শব্দ পেয়ে যাবেন। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই জানতে পারবেন মানুষ ইউটিউবে কী কী বিষয়ে সার্চ করছে। এবং এই কি ওয়ার্ডগুলো আপনার ভিডিওর ডেসক্রিপশন, ট্যাগ, শিরোনামে ব্যবহার করে আপনার ভিডিওকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারেন। যেসব কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউমের প্রতিযোগিতা বেশি সেসব কিওয়ার্ডের দিকে প্রাথমিকভাবে না যাওয়াই উত্তম। কম্পিটিশিন কম কিওয়ার্ডের দিকে নজর দিলে ভালো হবে। যদি কোন কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম 1000 থাকে প্রতি মাসে- এই ধরনের কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যেতে পারে। গুগল সার্চ সাজেশন, কিওয়ার্ড প্লানার ইত্যাদি দিয়ে আপনি আপনার ভিডিওর জন্য কিওয়ার্ড এর গবেষণা সহজেই করতে পারবেন।

ভিডিওর ডেসক্রিপশনে টাইটেল কিওয়ার্ড অবশ্যই রাখবেন। তাছাড়া বর্ণনার ভিতরে ফোকাস কিওয়ার্ড অবশ্যই ব্যবহার করবেন। তবে ফোকাস কিওয়ার্ড খুব বেশি ব্যবহার করা ঠিক না। সার্চ ইঞ্জিন তবে বিষয়টিকে অন্যভাবে নেবে। এবং আপনার রেজাল্ট পাওয়ার থেকে উল্টো কাজ করবে। মিনিমাম ৩০০ শব্দ ব্যবহার করে ভিডিও ডেসক্রিপশন লিখুন। ভিডিওর টাইটেল খুব বেশি বড় ও ছোট যাতে না হয়। ভিডিও টাইটেল লেখার সময় ২৫-৩০ টি শব্দ ব্যবহার করুন।

ভিডিও ট্যাগ এর ব্যবহার করবো কীভাবে

পূর্বে ভিডিও ট্যাগের বিষয়ে বলেছি। ভিডিও ট্যাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সার্চ ইঞ্জিনে ভিডিও র্যালঙ্ক করার জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ট্যাগ থেকে সার্চ ইঞ্জিনগুলো তথ্য সংগ্রহ করে এবং যারা সার্চ করেন তাদের কাছে ফলাফল প্রকাশ করে। আপনার দেওয়া ট্যাগের কিছু যখন কেউ সার্চ করে তখন আপনার ভিডিও চট করে তার রেজাল্টে দেখিয়ে দেয়। এতে করে আপনার ভিডিওর ওপর ক্লিক করার হার বেড়ে যায়। আপনার ভিডিওতে ক্লিক মানেই ভিউ বেড়ে যাওয়া। তাই ভিডিও আপলোড করার সময় ট্যাগ একটু ভেবে চিন্তে দেবেন। এই ট্যাগ শুধু আপনার ভিডিওকে র্যায়ঙ্ক করবে না- এর মাধ্যমে অন্য ভিডিওর রিলেটেড ভিডিও হিসেবে ইউটিউব শো করাবে। এতে ভিডিও ভিজিটর আসার সুযোগ তৈরি হবে।

ভিডিওর ফাইল নেম পরিবর্তন করুন

ভিডিও এডিট করার সময় নানা নামেই ভিডিও সেভ করতে পারেন ডিভাইসে। কিন্তু আপলোড করার সময় অবশ্যই আপনি যে টাইটেল রিসার্চ করে বের করেছেন সেই নামেই রিনেম করে নিন। ভিডিওর জন্য এসইও ফ্রেন্ডলি টাইটেল সার্চ রেজাল্টে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

ভিডিও পরিপূর্ণ তথ্য দিয়ে তৈরি করুন

ভিডিও যখন বানাবেন আপনার ভিডিওতে আলোচিত তথ্যগুলোর বিস্তারিত বলুন। যাতে করে দর্শক ভালোভাবে বুঝতে পারে। তখন দর্শক আপনার চ্যানেলের নাম মনে রাখবে এবং ভবিষ্যতে আপনার চ্যানেলে আবার ভিজিট করবে। একটা টপিকের ওপর চেইন টপিক তৈরি করুন। এবং বিষয়ভিত্তিক আলাদা আলাদা প্লেলিস্ট তৈরি করুন। পরিপূর্ণ তথ্যসমতে ভিডিওর অর্গানিক প্রচার হয় বেশি। যা আপনার ইউটিউবিংকে আরও সহজ করে তোলে। একটি তথ্যসমৃদ্ধ ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে অন্তত ৫ মিনিটের ভিডিও বানানোর টার্গেট গ্রহণ করুন। এতে করে আপনার ওয়াচটাইম বেড়ে যাবে।

সুতরাং ভিডিও আপলোড করার পূর্বে ভাবুন, অনলাইন ফ্রি কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল থেকে রেসার্চ করুন, টাইটেল, ট্যাগ, এবং ভিডিওর দৈর্ঘ ও গুণগত মান বাজায় রাখতে চেষ্টা করুন। তবেই ইউটিউব থেকে সফল হবেন। আমাদের বিশ্বাস এগুলো অনুসরণ করলে আপনি সফল হবেনই।

Leave a Comment